ব্যাংক ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে দেয়ায় বড় শিল্প উদ্যোক্তারা লাভবান হয়েছেন। কিন্তু বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা। লাভ দূরে থাক সুদ বাড়িয়ে দিচ্ছে তাদের ব্যবসার খরচ।
তাই নিজেদের করা আমানত ও ঋণের নয়-ছয় শতাংশ সুদহার তুলে দিয়ে বাজারভিত্তিক সুদ ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আর আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষার যুক্তি দিয়ে ২০২১ সালে ব্যাংক উদ্যোক্তাদের চাপে ঋণের সুদ ৯ শতাংশ এবং আমানতের সুদ হার ৬ শতাংশে বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন মূল্যস্ফীতি ছিলো সাড়ে পাঁচ শতাংশের বেশি।
বেঁধে দেয়া এই সুদ হার জীবনযাত্রার খরচকে বাড়িয়ে অর্থনীতিতে স্থবিরতা আনবে বলে শঙ্কা ছিল বিশ্লেষকদের। যদিও সুদ হার নমনীয় না করার বিষয়ে অনড় থেকেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশ ছাড়ানোর পর সুদহার ব্যবস্থা সংস্কারের পরামর্শ দিচ্ছে আইএমএফ। তাই সুর পাল্টাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকও।
‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সুদহারের সীমা এবং সম্ভাব্য বিকল্প নীতির প্রভাব’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বলছে, আরোপিত এই সুদ শিল্প খাতের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিলেও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঋণ পাচ্ছেন না। মোট ঋণের ৬০ ভাগই পেয়েছেন বড় বড় শিল্প উদ্যোক্তারা।
গবেষণায় বলছে সুদহার কম থাকায় ঋণের চাহিদা বাড়লেও বিপরীতে কমেছে আমানতের পরিমাণ। এতে চাহিদা ও সরবরাহের অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে।
ফলে ব্যাংকগুলোর ঋণযোগ্য তহবিলে চাপ বাড়বে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাজারভিত্তিক ব্যবস্থাই হতে পারে উপযুক্ত সমাধান। সুদহারের ওপর বিদ্যমান সীমাও বাতিল করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দীন বলেন, এই পরিস্থিতিতে ঋণ বা আমানত, সব খাতেই বাজারভিত্তিক সুদহার বজায় রাখা উচিৎ।
বর্তমানে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৪ শতাংশের ওপরে উঠলেও, আমানত প্রবৃদ্ধি আট শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে।