বিতর্কিত সফর শেষ করে তাইওয়ান ছাড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। বুধবার (৩ আগস্ট) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে রাজধানী তাইপের বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।চীনের কঠোর হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় মালয়েশিয়া থেকে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে পৌঁছান পেলোসি। ১৯৯৭ সালের পর এটি কোনো মার্কিন শীর্ষ রাজনীতিকের তাইওয়ান সফর। পৌঁছেই পেলোসি বলেন, তাইওয়ানের গণতন্ত্র রক্ষায় তাদের পাশে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (৩ আগস্ট) তাইওয়ানের পার্লামেন্টে বক্তব্য দেন পেলোসি। বক্তৃতায় তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাইওয়ানের বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। তাইওয়ানের শান্তি যাতে অক্ষুণ্ন থাকে, যুক্তরাষ্ট্র সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল।
এরপর দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি।
চীন আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, পেলোসি শেষ পর্যন্ত তাইওয়ানে পৌঁছালে তারা চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। পেলোসি তাইওয়ানে পৌঁছানোর আগে চীনের ২১টি যুদ্ধবিমানের একটি বহর তাইওয়ানের আকাশ প্রদক্ষিণ করে। বেইজিংয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকেও ডেকে পাঠানো হয়।
বেইজিংয়ের হুমকি-ধমকি ও সতর্কতা উপেক্ষা করে তাইওয়ান সফর করায় চীন বেশ চটেছে। এরই মধ্যে তা টের পেতে শুরু করেছে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তাইওয়ান। চীনের বাজারে তাইওয়ানের ওপর একগাদা বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি সশস্ত্র সামরিক মহড়াও চালিয়েছে।
তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড মনে করে চীন। তাই তারা তাইওয়ানকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বিচ্ছিন্ন করে রাখার চেষ্টা করে এবং অন্য দেশগুলো এই অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে এর বিরোধিতা করে। অন্যদিকে তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র মনে করে।
এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেলোসির সফরে সবচেয়ে দ্রুত যে প্রতিক্রিয়া চীন দেখিয়েছে, তা হলো তাইওয়ানকে ঘিরে থাকা অঞ্চলগুলোতে সামরিক মহড়া। মহড়া থেকে আসল গোলা ছোড়া হয়। কিছু কিছু জায়গায় তাইওয়ানের উপকূল থেকে দূরত্ব ছিল মাত্র ২০ কিলোমিটার।
তাইওয়ান উপত্যকায় সামরিক মহড়ায় দূরপাল্লার গোলাও ছোড়া হয়েছে। এই উপত্যকা চীন থেকে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করেছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই মহড়াকে ‘আন্তর্জাতিক নীতিমালাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য একটি অযৌক্তিক পদক্ষেপ’ বলে মন্তব্য করেছে।