সোমবার (১১ জুলাই) রাতে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বর্ষা রাণী রাজভর গাজীপুর বিজ্ঞান কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী এবং গাজীপুর মহানগরের পশ্চিম বিলাসপুর এলাকার বাদল রাজভরের মেয়ে। বর্ষার স্বামী দীপ্ত রাজভর গাজীপুর মহানগরের উত্তর বিলাসপুর এলাকার রামনাথ রাজভরের ছেলে।
নিহতের মা লক্ষ্মী নারায়ণ রাজভর জানান, ২০২১ সালের মার্চে প্রেম করে বর্ষারাণী ও দীপ্ত’র বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েকে বাবার বাড়িতে তেমন যেতে দিতেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি জানান, এসএসসি পাশ করার পর এবার বর্ষাকে গাজীপুর বিজ্ঞান কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন চাইতেন না বর্ষা আরও লেখাপড়া করুক।
এদিকে বর্ষার বেকার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি যৌতুকের জন্য বর্ষাকে চাপ দিতেন। সর্বশেষ দীপ্ত’র দাদিকে দিয়ে বর্ষার কাছে পাঁচ লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক দাবি করেছিলেন। এসব নিয়ে তাদের সংসারে বিভিন্ন সময় কলহ হতো বলেও অভিযোগ বর্ষার মায়ের।
লক্ষ্মী নারায়ণ রাজভর আরও জানান, সোমবার রাত ৮টার দিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রামনাথ মোবাইল ফোন করে বর্ষার মা-বাবাকে জানান, বর্ষা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।
পরে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে গিয়ে বর্ষার মরদেহ দেখতে পান। এসময় স্বামী দীপ্ত কাছে ছিল না। ঘটনার পর পরিবারের লোকজন বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন লক্ষ্মী নারায়ণ রাজভর।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে দীপ্ত হাসপাতালে বর্ষার মরদেহ রেখে যান, যা হাসপাতালের রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ রয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত করার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
জয়দেবপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. মোশারফ হোসেন জানান, বর্ষার কপালে ও গলার নিচে কালো দাগ রয়েছে। স্বামী-শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন ঘরে তালা আটকিয়ে পালিয়ে গেছেন। রাতেই হাসপাতাল চত্বর থেকে দীপ্তর বাবা রাম নাথকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
বর্ষার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।