বাজারে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় এর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এই মুহূর্তে ব্যাংকে ৯৫ টাকার কম দামে ডলার মিলছে না বললেই চলে।
অর্থচ আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলার ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮৭ টাকা ৬০ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে। কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে এর দাম বেড়ে ১০৩ টাকায় উঠেছে। আন্তঃব্যাংকে চলতি অর্থবছরের সাড়ে ১০ মাসে ডলারের দাম বেড়েছে ২ টাকা ৭০ পয়সা।
বিদ্যমান ডলার সংকট মোকাবিলার কৌশল নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। অর্থনীতিবিদদের অনেকে ডলারের দাম বাড়িয়ে সংকট মোকাবিলার পক্ষে হলেও অনেকেই আবার এর বিরোধিতা করছেন।
অন্যদিকে রপ্তানিকারকরা ডলারের দাম বাড়ানোর পক্ষে হলেও আমদানিকারকরা এর তীব্র বিরোধিতা করছেন। স্বার্থের দ্বন্দ্বের কারণে রপ্তানিকারক ও আমদানিকারকরা দুই মেরুতে অবস্থান নিয়েছেন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে প্রবাসীরা লাভবান হচ্ছেন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সব পক্ষই সংকট মোকাবিলায় টাকা পাচার বন্ধ করা ও রেমিট্যান্স বাড়ানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ডলার সংকট নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বুধবার যুগান্তরের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমন মতামত দিয়েছেন। এ বিষয়ে কথা বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি ড. মইনুল ইসলাম, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান ও বাংলাদেশ রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এখন রিজার্ভ ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। আগেই এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল। রিজার্ভ থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেওয়ার সিন্ধান্তটি সঠিক ছিল না। এখন তা প্রমাণিত হচ্ছে। কারণ রিজার্ভ হচ্ছে বিপদের বন্ধু। বর্তমানে ডলার সংকট মোকাবিলা করতে প্রথমে আমদানির ওপর চাপ কমাতে হবে। এ জন্য ডলারের দাম কিছুটা বাড়াতে হবে।
খুব বেশি বাড়ানো যাবে না। তা হলে টাকার মান কমে গিয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাবে। মূল্যস্ফীতির হার আরও বেড়ে যাবে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আমদানিজনিত কারণে এমনেই মূল্যস্ফীতির হার বাড়বে। কেননা আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সেগুলোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি দেশে আসছে।