তৃতীয় দিনের পোর্ট এলিজাবেথের স্পিন যেভাবে টার্ন করছিল, তখনই ভয় জেগেছিল বাংলাদেশ শিবিরে। আর চতুর্থ দিনে সে টার্নে পুরোপুরি নাকাল মুমিনুলরা। তৃতীয় দিনে ৩ উইকেট হারানো টাইগার শিবির চতুর্থ দিনের আধা সেশনের আগেই ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারে বিশাল ব্যবধানে। ৪১৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ইনিংস গুঁড়িয়ে যায় মাত্র ৮০ রানে।

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে সোমবার (১১ এপ্রিল) দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ ম্যাচটি হেরেছে ৩৩২ রানের বড় ব্যবধানে। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের সব কটি হেরে হোয়াইটওয়াশ টাইগাররা।
পোর্ট এলিজাবেথে তৃতীয় দিনের শেষ দিকেই খেলা যাচ্ছিল না স্পিন। দুই প্রোটিয়া স্পিনার কেশভ মহারাজ ও সিমন হারমার দুই দিক থেকে চেপে ধরে বাংলাদেশকে। মাত্র ৯.১ ওভার বল করে তুলে নেন ৩ উইকেট। আর চতুর্থ দিনে ১৪.২ ওভার বল করে তুলে নেন বাকি ৭ উইকেট। মহারাজ একাই শিকার করেন ৭ উইকেট। বাকি ৩ উইকেট নিজের ঝুলিতে পুরেন হারমার।
তবে অতি মাত্রায় স্পিনেই যে শুধু বাংলাদেশ নাকাল হয়েছে, বিষয়টা ঠিক তেমন নয়। বরং পিচে এমন টার্ন দেখে বাংলাদেশি ব্যাটারদের মনেই ভয় ঢুকে গিয়েছিল। যার ফলে মুুমিনুল ও ইয়াসির তুলে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। অন্যদিকে লিটন কুমার দাস আউট হন উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে। টাইগারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৭ রান আসে তার ব্যাট থেকেই। শেষদিকে ২০ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরের পথ ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে চতুর্থ দিনে প্রোটিয়া স্পিন বিষের শিকার হয়ে বিদায় নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক ও ইয়াসির আলী। মুশফিক বিদায় নিয়েছেন ৮ বলে ১১ রান করে। আউট হওয়ার আগে মুমিনুলের ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ৫ রান। ইয়াসির আলী কোনো রান করার আগে ফিরেছেন হারমারের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে। এর আগে তৃতীয় দিন তামিম ১৩, শান্ত ৭ ও জয় ০ রানে আউট হয়ে মাঠ ছেড়েছেন।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রান করা প্রোটিয়ারা, দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। পোর্ট এলিজাবেথে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকে স্বাগতিকরা। তাইজুল, মিরাজ ও খালেদ মিলে যতক্ষণে তাদের ৬টি উইকেট শিকার করেন, ততক্ষণে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্যটা গিয়ে দাঁড়ায় পাহাড় সমান। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটি শিকার করা তাইজুল দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৭ রানের বিনিময়ে শিকার করেন ৩ উইকেট। ৩৪ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট শিকার করেন মিরাজ।
তার আগে সব কটি উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ২১৭ রান করে বাংলাদেশ। মুশফিকের ৫১ ও ইয়াসিরের ৪৬ রানের ইনিংস ছাড়া আর কেউই ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে হারমার ৩টি ও মহারাজ দুটি উইকেট শিকার করেন।
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৫৩ রানে অলআউট করে বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন কেশভ মহারাজ। এলগার ছাড়াও হাফসেঞ্চুরি করেন কিগান পিটারসেন, টেম্বা বাভুমা ও ডিন এলগার। পিটারসেন ৬৪, বাভুমা ৬৭ ও এলগার ৭০ রান যোগ করেন স্কোর বোর্ডে। বাকিদের মধ্যে রায়ান রিকেলটন ৪২, উইয়ান মুল্ডার ৩৩ ও সিমন হারমার ২৯ রান করে। এদের মধ্যে ডিন এলগার, কিগান পিটারসেন, রায়ান রিকেলটন, উইয়ান মুল্ডার, কেশভ মহজারাজ ও সিমন হারমারের উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম।