Thursday, December 7, 2023

করোনার ঊর্ধ্বগতিতে বিক্রি বেড়েছে সুরক্ষাসামগ্রীর

তারিখ:

দেশে আবারও উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এ কারণে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। মাঝে করোনার সুরক্ষাসামগ্রী বিক্রি প্রায় একদম কমে গেলেও ফের বিধি-নিষেধ চালুর সঙ্গে সঙ্গে দেদার মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীজুড়ে আবার নতুন করে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের পসরা সাজিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা।

পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এখন চাহিদা বাড়লেও দাম তেমন বাড়েনি। গত ৩ জানুয়ারি সরকারের দেওয়া ১১ দফা বিধি-নিষেধে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরতে বলা হয়। না হলে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। এর পর থেকেই মাস্কের ব্যবহার বাড়তে শুরু হয়। সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ফার্মেসিতে এখন আগের চেয়ে ৩০-৪০ শতাংশ বেশি মাস্ক বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা বাড়ায় আগের মতো ফুটপাতেও মাস্ক ও স্যানিটাইজারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। এসব দোকানে ৫০টির এক প্যাকেট সার্জিক্যাল মাস্ক ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস হিসেবে পাঁচ টাকায় বিক্রি করছে। বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড়ের মাস্ক ৩০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে বিভিন্ন ফার্মেসিতে ভালো মানের বা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এক বক্স সার্জিক্যাল মাস্ক ৩০০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কাপড়ের ভালো মানের মাস্ক ৫০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকলেও বেশি বিক্রি হচ্ছে সেপনিল ও হেক্সিসল। হেক্সিসল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ৪০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ লিটার ৭৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সেপনিল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ৮০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ লিটার দুই হাজার ৮০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে মাস্ক পরার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিক্রি বেড়েছে। তবে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলে এসবের বিক্রি আরো কয়েক গুণ বেড়ে যেত।

রাজধানীর মধ্যবাড্ডা এলাকার মাস্কের খুচরা বিক্রেতা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার কড়াকড়ি আরোপ করায় এখন আবার মাস্কের চাহিদা আগের চেয়ে বেড়েছে। আগে রাজধানীতে অর্ধেক মানুষ মাস্ক ব্যবহার করত। ঘোষণার পর থেকে বাধ্য হয়ে এখন বেশির ভাগ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছে। তবে দাম এখনো বাড়েনি। আগের দামেই মাস্ক বিক্রি করছি। ’

রাজধানীর দক্ষিণ কুড়িল এলাকায় ওভারব্রিজের নিচে মাস্ক বিক্রি করেন মিজানুর রহমান। জানতে চাইলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাস্ক বিক্রি আগের চেয়ে কিছু বেড়েছে। তবে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলে আরো বিক্রি বাড়ত। এখন দৈনিক দুই হাজার ৫০০-তিন হাজার টাকার মাস্ক বিক্রি করা যায়। যা আগে দুই হাজার টাকার নিচে ছিল। ’

মাস্ক কিনতে আসা একাধিক ক্রেতারা বলেন, ‘বাজারে এখন বিভিন্ন ডিজাইনের ভালো মানের মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে। দামও হাতের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। তবে মাস্কের চাহিদা যেভাবে বাড়ছে, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যেন অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে না দেন, সেই বিষয়টি সরকারের কড়া নজরদারির মধ্যে রাখতে হবে। ’

করোনার সুরক্ষাসামগ্রীর বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক গেটে ইসলামী ফার্মেসির বিক্রয়কর্মী চান মাহমুদ বলেন, ‘নতুন করে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আবার মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বিক্রি বাড়তে শুরু হয়েছে। গত মাসের তুলনায় চলতি মাসে অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে। করোনার শুরুতে যেমন মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের পাশাপাশি পিপিই, গ্লাভস ও চশমাসহ সুরক্ষাসামগ্রী বিক্রি হতো, কিন্তু এখন মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ছাড়া অন্য সুরক্ষাসামগ্রীর চাহিদা একদম কমে গেছে। ’

তিনি বলেন, ‘এখন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে সার্জিক্যাল মাস্ক ও বিভিন্ন ডিজাইনের ভালো মানের কাপড়ের মাস্ক। এক বক্স হাইজেনিকযুক্ত সার্জিক্যাল মাস্ক ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উন্নত মানের কাপড়ের মাস্ক সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস। বিভিন্ন কম্পানির হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকলেও সেপনিল ও হেক্সিসলের চাহিদা বেশি। ’

জনপ্রিয় সংবাদ